মাসুদা আক্তার: কুমিল্লার মুরাদনগরে ধষর্ণ নিয়ে রাজনীতির ঘটনার সারসংক্ষেপ এমন ‘ফজর আলী ও এক নারীর ভেতর পরকীয়ার সম্পর্ক ছিলো বহুদিন যাবত । স্বামী বিদেশ । সবাই গেছে পূজো মন্ডপে, বাসায় কেউ নেই । এই সুযোগে দুইজন ঘনিষ্ঠ ভাবে মিলিত হইছে ।কিন্তু পূজো শেষে তাদের হাতে নাতে ধরা হয় । পরকীয়ার সম্পর্ক হিসেবে , দুইজনকেই উত্তম মধ্যম দিয়ে ছেলেকে বের করে দেওয়া হয় । কড়া মাইর খেয়ে ছেলে হাসপাতালে ছিলো একদিন ।
একপর্যায়ে গ্রামের সেই পুরনো নিয়মে , এই নিয়ে সালিশ হয়। কিন্তু এর পরপরই মেয়ের স্বামী তাকে চাপ দেন মামলা করার জন্য, নাহয় ডিভোর্স দিবেন । ডিভোর্স হইলে মেয়ের একূল ঐকূল দুইকূল’ই যাবে এই ভয়ে এই নারী মামলা দেয় ।
এই কারণেই মাঝখানে দুইদিন গ্যাপ যায় । ঘটনা বৃহস্পতিবারের । মামলা হয় শনিবার । লজিক্যালি , জোর করে ধর্ষণের মামলা হইলেই ঐদিন সাথে সাথেই থানায় মামলা হওয়ার কথা। আর ধর্ষণে অভিযুক্ত ফজর আলী ও হাসপাতালে রিল্যাক্স মুডে শুয়ে থাকতো না । যেটা দেখা যায় গতকালই । গতকাল মামলা হওয়ার পরপরই অভিযুক্ত ঢাকায় পালিয়ে যায় । গ্রামে নরমালি যেটা হয় , এসব ঘটনার এখন ভিডিও করে রাখা হয় । এখানে যারা এই কাজটা করছে — ওরা মূলত চেহারায় মানুষ , মস্তিষ্কে নর্দমা সবচেয়ে দুর্গন্ধময় কীট । মূলত এরা আপলোড করার পরপরই ভিডিওটা ছড়িয়ে পড়ে । কারণ ক্যাপশন ছিলো রসে ভর্তি ।
কাজটা করে স্থানীয় সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম নামে একজন, যিনি স্থানীয় আওয়ামীলীগ ঘরনার এমপির ঘনিষ্ঠ চামচা ছিলেন।
হিন্দু ধর্ষণ / সংখ্যালঘু ধর্ষণ! দরজা ভেঙ্গে বিএনপি নেতার হাতে হিন্দু নারী ধর্ষণ!
এরপরই এটা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পেজে ব্যাপক হারে ছড়ানো হয় , ‘ সংখ্যালঘু নির্যাতন , বিএনপির আসল চেহারা’ ক্যাপশনে। সংখ্যাল*ঘু ট্যাগ দিলে ভারতের নজর পাওয়া যায় ।
সাথে যেহেতু বিএনপির ট্যাগ ছিলো , সেহেতু শিবিরের নেতারাও এটা ভালোভাবে ছড়াইতে থাকে । এভাবে সব দিক থেকে ছড়ানোর পরপরই এটা ভাইরাল হয়। ফজর আলী একটা সময় আওয়ামীলীগের পাওয়ারফুল নেতা ছিলো । এসব প্রমাণ সোশ্যাল মিডিয়ায় আছে ৷ এখন বিএনপির হাতে পুনর্বাসিতে হইলেও সে হাজতে থাকব সে বিষয়ে সন্দেহ নেই ।
কিন্তু একটা অরাজনৈতিক ঘটনাকে জাস্ট রঙ মাখিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ছড়ানো হইলো যেটা নিয়ে ভারত পর্যন্ত নিউজ করলো আজ ।
বাংলাদেশে আসলে সত্য খুঁজে বের করা টাফ । সত্য বাঁচিয়ে রাখাও টাফ । কারণ এখানে একেকটা ঘটনা শেন ওয়ার্নের বলের মতো সেকেন্ডেই টার্ন নেয় , একেকটা ঘটনা ন্যাকা নায়িকাদের মতোই রূপ বদলায় ক্ষণে ক্ষণে কোটি কোটি সাংবাদিকদের হাতে পইড়া। এখানে সত্যে চাপা পড়ে থাকে মূলত রাজনীতি ও ব্যক্তি স্বার্থের ধ্বংস স্তূপের নিচে।কারণ এখানে সত্য বলা মানে তোমার যে কোনো একদলের দিকে হেলে পড়া এবং বিপক্ষ দলের গালি খাওয়া । এটাই বাংলাদেশ।