চোরা চালানে হাতে নাতে ধরা খেলেন বিএনপি নেতা!

ক্রাইম; দর্পন; ক্রাইম দর্পন; crime; crimedorpon; crimedarpan; dorpon; darpan; The Weekly Crime Dorpon; the weekly crime darpan; crimedorpon.com;

কাজী তৌফিক এলাহী তারেক: বিএনপির একজন স্থানীয় নেতা চোরাচালানের সময় হাতে নাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ বিদেশি পণ্য, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা, জব্দ করা হয়েছে।

আটককৃত এই বিএনপি নেতা হচ্ছেন মো. শামীমুল হক, যিনি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরেই তাকে চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত থাকার সন্দেহ করা হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।

শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, “আমরা গোপন একটি সূত্র থেকে জানতে পারি যে বিদেশি পণ্যের একটি বড় চালান সীতাকুণ্ড হয়ে রাজধানীতে যাচ্ছে। এরপরই আমরা অভিযান চালাই এবং রাত ২টার দিকে একটি গুদাম ঘরে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চোরাচালানের পণ্য উদ্ধার করি।”

উদ্ধারকৃত পণ্যের মধ্যে রয়েছে ব্র্যান্ডেড মোবাইল ফোন, দামি পারফিউম, সিগারেট, বিদেশি মদ ও ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ। এসব পণ্য কোনো ধরনের শুল্ক না দিয়ে অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করানো হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।

তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শামীমুল হক দীর্ঘদিন ধরেই এই ধরনের চোরাচালান পরিচালনা করে আসছিলেন। তিনি তার রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বারবার এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

একজন কর্মকর্তা বলেন, “তিনি রাজনৈতিক পরিচয়ের ঢাল ব্যবহার করে নিজেকে রক্ষা করতেন। এমনকি আগেও তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠলেও প্রভাব খাটিয়ে তিনি বারবার রক্ষা পেয়েছেন।”

সীতাকুণ্ড এলাকার বাসিন্দারা জানান, শামীমুল হকের বিরুদ্ধে নানা সময় নানা অভিযোগ উঠলেও স্থানীয়ভাবে তার বেশ প্রভাব ছিল। অনেকে ভয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাননি। তবে এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলায় অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, “সে দীর্ঘদিন ধরে বৈধ ব্যবসা করা লোকজনের ক্ষতি করে আসছিল। চোরাচালানের মাধ্যমে বাজারে পণ্যের দাম অস্থির করে তুলত।”

আইনি প্রক্রিয়া চলছে

আটকের পর শামীমুল হককে সীতাকুণ্ড থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে শুল্ক ফাঁকি ও চোরাচালান আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, এ ঘটনায় আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।