বিশ্বনাথে ইলিয়াসের জন্যে নিহতদের পরিবারের খবর নেয় না কেউ

ক্রাইম; দর্পন; ক্রাইম দর্পন; crime; crimedorpon; crimedarpan; dorpon; darpan; The Weekly Crime Dorpon; the weekly crime darpan; crimedorpon.com;

ফাহমিদা সুলতানা মিতা: ২০১২ সালে বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম. ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হবার ঘটনায় তাঁর সন্ধানের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশ-আন্দোলনকারীদের মধ্যে ঘটে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা। এসময় নিহত হন উপজেলা যুবদল নেতা মনোয়ার হোসেন, ছাত্রদল নেতা সেলিম আহমদ ও বিএনপি কর্মী রিকশাচালক জাকির হোসেন। বর্তমানে অভাব-অনটনে দিন কাটছে নিহতদের পরিবারের। প্রথম দিকে বিএনপিসহ বিভিন্ন লোকজন খোঁজখবর নিলেও এখন আর কেউ খোঁজ নেন না। সবমিলিয়ে ভাল নেই নিহত মনোয়ার, সেলিম ও জাকিরের পরিবার।
২৩ এপ্রিলের ছয়দিন আগে অর্থাৎ, ১৭ এপ্রিল ঢাকা থেকে ড্রাইভার আনছার আলীসহ নিখোঁজ হন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ইলিয়াস আলী। নিখোঁজের ঘটনায় তার সন্ধানের দাবীতে বিশ্বনাথের বিএনপি-জামায়াতসহ কয়েক হাজার মানুষ আন্দোলনে নামে।

ঐ সময় তারা মিছিল সহকারে উপজেলা সদরে প্রবেশ করতে চাইলে বাঁধা দেয় পুলিশ। মিছিলকারীরা বাঁধা ডিঙ্গাতে চাইলে শুরু হয় সংঘর্ষ। উত্তেজিত মানুষজন হামলা চালায় উপজেলা পরিষদে। এসময় উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসায়-জিপগাড়িতে (সিলেট-ঘ ১১-০২৩৮), বিভিন্ন ব্যাংক, মার্কেট, কমিউনিটি সেন্টার, বিপনিবিতানে হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে উপজেলা পরিষদের ১৯টি দপ্তরের ১ কোটি ৬২ লাখসহ প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। পুলিশ-মিছিলকারী ভয়াবহ সংঘর্ষে উপজেলা যুবদল নেতা মনোয়ার হোসেন, ছাত্রদল নেতা সেলিম আহমদ ও বিএনপি কর্মী রিকশাচালক জাকির হোসেন নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ হন ছাত্রদল নেতা সাহেল সামাদ, জুবায়ের আহমদ, যুবদল নেতা রফিক। গুরুতর আহত হন বিশ্বনাথ থানার তৎকালিন পরিদর্শক (তদন্ত) চান মিয়া, নায়েক সাধন চাকমা, জামালসহ অর্ধশতাধিক লোক।
হরতালের প্রথম দিন ২২ এপ্রিল ও ভয়াবহ ২৩ এপ্রিলের ঘটনায় পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক বাদি হয়ে পৃথক পৃথক ছয়টি মামলা বিশ্বনাথ থানায় দায়ের করে। এতে উপজেলার আটটি ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালিন চেয়ারম্যানসহ প্রায় চৌদ্দ হাজার ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়।

২০১২ সালের ২৩ এপ্রিল পুলিশ-মিছিলকারী ভয়াবহ সংঘর্ষে নিহত উপজেলা যুবদল নেতা মনোয়ার হোসেন, ছাত্রদল নেতা সেলিম আহমদ ও বিএনপি কর্মী রিকশাচালক জাকির হোসেনের পরিবার ভাল নেই। অভাব-অনটনেই চলছে তাদের পরিবার। ঘটনার পরে প্রথমদিকে প্রিয়জন হারা তিন পরিবারের খোঁজখবর নেয়া হলেও কেউ এখন আর খবর নেয়না পরিবারগুলোর। সাহায্য সহযোগিতাও আর কেউ করে না। দলের পক্ষ থেকেও খোঁজ খবর নেয়া বন্ধ বললেই চলে।