ইসরাত জান্নাত নাজমিন: সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও জামায়াত-শিবিরের অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম। কিন্তু তার সাহসী সাংবাদিকতার কারণেই হয়তো তাকে প্রাণ দিতে হলো। গতকাল রাতে ঢাকার একটি অলিগলিতে অজ্ঞাত আসামীরা তাকে গুলি করে হত্যা করে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাত ১০টার দিকে আমিনুল তার অফিস থেকে বের হয়ে বাসায় ফিরছিলেন। এমন সময় মোটরসাইকেল আরোহী দু’জন তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
আমিনুল ইসলাম স্থানীয় একটি নিউজ পেপারে কাজ করতেন। গত কয়েক বছর ধরে তিনি জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ড, মৌলবাদী তৎপরতা ও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন লিখে আসছিলেন। সম্প্রতি তিনি নারায়ণগঞ্জে সংঘটিত এক সাম্প্রদায়িক হামলার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে জামায়াতের স্থানীয় নেতাদের সম্পৃক্ততা ছিল বলে দাবি করা হয়েছিল।
তার সহকর্মী রানা মিয়া বলেন, “আমিনুলকে একাধিকবার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তাকে বলা হয়েছিল, জামায়াত-শিবির নিয়ে লেখা বন্ধ করতে। কিন্তু তিনি সত্য প্রকাশ করতে দ্বিধা করেননি।”
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, আমিনুলের সাংবাদিকতাই তার মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তবে কারা এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে, তা খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ময়মনসিংহের এক বাড়িতে আমিনুলের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার পরিবার ও সহকর্মীরা চোখের জল ফেললেও, আমিনুলের স্ত্রী জানান, “সত্যের পথে চলতে গিয়ে আমার স্বামী মারা গেছেন। আমি গর্বিত। কিন্তু আমি ন্যায়বিচার চাই।”
মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।