অহি আহমেদ: ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপি-র রাজনীতিতে একদিকে উৎসবমুখর বিজয় র্যালি, অন্যদিকে চরম দখলদারি আর অভ্যন্তরীণ খুনোখুনি—এই দুই চিত্র একই সাথে দেখা যাচ্ছে। গণতন্ত্রের বুলি মুখে, কিন্তু মাঠে চলছে ভয়ভীতি, চাঁদাবাজি আর ক্ষমতার একচেটিয়া কৌশল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিএনপি এখন এমন এক রাস্তায় হাঁটছে যা সরাসরি নব্য ফ্যাসিস্ট ধাঁচের দিকে নিয়ে যাবে।
৫ আগস্টের পর দলীয় সংঘর্ষে অন্তত ৭৪ জন নিহত হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় এলাকা দখল, চাঁদাবাজি ও নেতৃত্বের জন্য মারামারি চলছে। তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরা অভিযোগ করছেন—”দল এখন নেতা আর তার স্বার্থ রক্ষার যন্ত্রে পরিণত হয়েছে, আমাদের জীবন মূল্যহীন।”
তারেকের প্রত্যাবর্তন: ক্ষমতার লালসা নাকি নতুন বাংলাদেশ?
লন্ডনে থাকা তারেক রহমানের ঢাকা ফেরার গুঞ্জন এখন রাজনৈতিক অঙ্গনের গরম ইস্যু। সমর্থকরা বলছেন তিনি দেশের নতুন নেতৃত্ব গড়বেন, সমালোচকরা বলছেন—এটি হবে আরও কঠোর, নেতাকেন্দ্রিক শাসনের সূচনা, যেখানে দলের অভ্যন্তরীণ ভিন্নমত সম্পূর্ণ নিঃশেষ হয়ে যাবে।
বিশ্লেষণ: মুখোশের আড়ালে শাসনের নীলনকশা
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি বর্তমানে তিনটি স্তম্ভে দাঁড়িয়ে ভবিষ্যতের রাস্তাটা তৈরি করছে—
জনপ্রিয়তার অভিনয়: বিজয় র্যালি, সংস্কার প্রস্তাব, আন্তর্জাতিক বার্তা—সবকিছু যেন গণতন্ত্রের মুখোশ।
শক্তির প্রদর্শনী: অভ্যন্তরীণ দমন, প্রতিপক্ষকে ভয় দেখানো, আর্থিক চাঁদাবাজি।
নেতাকেন্দ্রিক পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ: তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন দিয়ে সব ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত করা।
এই ধারা অব্যাহত থাকলে বিএনপি কাগজে-কলমে গণতান্ত্রিক হলেও, বাস্তবে একটি ভয়ঙ্কর নিয়ন্ত্রিত, বিরোধীদল দমনকারী, এবং ভয়-ভীতি নির্ভর শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারে—যা আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অভিধানে নব্য ফ্যাসিবাদ নামে পরিচিত।