ফাহিমা বেগম: বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপির অবস্থান এক সময় শক্তিশালী থাকলেও, বিগত এক দশকে তারা নিজেদের যেভাবে উপস্থাপন করেছে, তাতে সাধারণ মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন জেগেছে—জ্বালাও-পোড়াওই কি বিএনপির একমাত্র রাজনীতি?
২০১৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিএনপি ও তাদের জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধে দেশজুড়ে ভয়াবহ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা হয়েছে, ট্রেনে হামলা চালানো হয়েছে, রাস্তায় নেমে নিরীহ রিকশাচালক থেকে শুরু করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী পর্যন্ত সবাইকে টার্গেট করা হয়েছে। এসব কি কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনের বৈধ রূপ হতে পারে?
তাদের আন্দোলনের নামে রাজপথে সশস্ত্র অবস্থান, ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশের ওপর হামলা, রেললাইন তুলে ফেলা, সরকারি অফিসে আগুন লাগানো—এসব কর্মকাণ্ড বারবার প্রমাণ করেছে বিএনপির রাজনীতি জনকল্যাণমুখী নয়, বরং প্রতিশোধ ও বিশৃঙ্খলামুখী।
বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব গণআন্দোলনের ভাষা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। জনগণের দুঃখ-কষ্টের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। বরং মানুষকে পুড়িয়ে মারার রাজনীতিকেই তারা বারবার আশ্রয় হিসেবে নিয়েছে। পেট্রোলবোমা যেন বিএনপির রাজনৈতিক প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
তাদের দাবিকৃত আন্দোলনের মূল লক্ষ্য কখনোই নির্বাচনী সংস্কার নয়, বরং একটি অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখল। গণতন্ত্রের কথা বলে তারা গণমানুষকে বারবার বিপদে ফেলেছে। ব্যবসায়ী, শ্রমিক, শিক্ষার্থী, এমনকি রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সও তাদের রোষানল থেকে রক্ষা পায়নি।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ এখন বিএনপির রাজনীতিকে ভয় পায়। কারণ তাদের মনে আছে আগুনে পুড়ে যাওয়া লাশ, কান্নার আওয়াজ, স্তব্ধ হয়ে যাওয়া শহরের চিত্র। বিএনপি আজও সেই নৃশংস রাজনীতির স্মৃতি বহন করে চলেছে।
সুতরাং, প্রশ্নটি শুধু যৌক্তিক নয়, অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক—জ্বালাও-পোড়াওই কি বিএনপির আসল রাজনীতি?
জনগণ এখন বিচার করতে শিখেছে। উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা ও শান্তির বিকল্প নেই। সেই বিবেচনায় বিএনপিকে সহিংসতার পথ ছেড়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে না পারলে, তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকারই থাকবে।