এখলাছুর রহমান: ১. ২০২৪ এর জুলাই বিপ্লবের পর যে আকাঙ্খা নিয়ে বাংলাদেশের আপামর জনগণ বর্তমান অন্তরবর্তীকালীন সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল জনগণের সেই আকাঙ্খা পূরনে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে ডক্টর ইউনুসের সরকার। একটি এনজিও মার্কা সরকার নিয়ে যে বাংলাদেশের মত একটি দেশ চালানো যায়না সেই সত্য অনুধাবন করার মত একটি লোক ও মনে হয় উনার সরকারে নাই। চরম অপরিপক্ষ একটি উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে ডক্টর ইউনুস দেশটাকে একেবারে খাদের কিনারে নিয়ে গেছেন। আইনশৃংখলার চরম অবনতি, চাঁদাবাজির মহোৎসব, সরকারী এবং প্রাকৃতিক সম্পদের লুটপাট টেকাতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে এই সরকার। ভোলাগজ্ঞের সাদা পাথর লুট থেকে শুরু করে নদী দখল, ফুটপাতে চাঁদাবাজি এবং যত্রতত্র মব সৃষ্টি করে মানুষ হত্যা করা এখন বাংলাদেশে রুটিন কাজে পরিণত হয়েছে।
২. তরুন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়ে স্হানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা পরিষদে জায়গা করে নিয়েছেলেন। এরকম একজন তরুন উপদেষ্টা একের পর এক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পরেছেন প্রকাশ্যে। আসিফের বাবা এখন এই উপদেষ্টার নাম বিক্রি করে নিজ এলাকা কুমিল্লার মুরাদনগরের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন । মানুষের জায়গাজমি দখল, থানার দালালী, গুম-খুনের হুমকি এবং এলাকায় সব ধরনের সরকারী-বেসরকারী টেন্ডারবাজির উপর একচ্ছত্র আধিপত্যে কায়েম করেছেন তিনি। কিছুদিন আগে বাংলাভিশন টিভি একটি প্রতিবেদনে আসিফের বাবার এই কুকীর্তি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছে। এই দিকে উপদেষ্টা নিজে ও ঢাকা উত্তর সিটির বিভিন্ন নিয়োগ, বদলি, কেনাকাটায় নিজের পছন্দের লোকদের বসিয়ে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। এসব অভিযোগ উঠার পর গত ৪মে ও ঢাকা উত্তর সিটিতে অভিযান চালিয়েছে দুদকের একটি টিম। তবে দুদক শুধুমাত্র ‘আইওয়াশ’ করতেই এই অভিযান চালিয়েছে বলে অভিযোগ আছে।
৩. জুলাই বিপ্লবের পর আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম সেটি ধীরেধীরে ফিকে হয়ে আসছে। জুলাই সনদ এবং ঘোষনাপত্র, নতুন সংবিধান, বিচার এবং নির্বাহী বিভাগের সংস্কার কোন দিকেই আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দোসরদের বিচার ও কচ্চপগতিতে চলছে । একটা ট্রাইবুনাল দিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছিল বিচার। দ্বিতীয় আরেকটা ট্রাইবুনাল গঠন করতে এই সরকারের ১০ মাস লেগেছে এবং এটি ও লোকবলের অভাবে পুরোধমে কাজ করতে পারছেনা। চলমান এই বিচার শেষ করতে কতদিন লাগবে এটা আল্লাহ মালুম। এদিকে নিত্যপণ্যের বাজারে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের ভেলকি, প্রকাশ্যে ছিনতাই, চুরি ,ডাকাতি এবং খুনখারাবি বন্ধে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে এই সরকার। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে এই উপদেষ্টা পরিষদের হাতে পড়ে পথ হারিয়েছে বাংলাদেশ।