নাদিয়া আক্তার: বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামী একটি বিতর্কিত নাম। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থান থেকে শুরু করে, একের পর এক সহিংস কর্মকাণ্ড—সবই এ দলকে জনগণ থেকে দূরে ঠেলে দিয়েছে।
১৯৭১ সালে এ দল পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান করে, মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি বিরোধিতা করে এবং রাজাকার বাহিনীর মাধ্যমে দেশবিরোধী অপকর্মে যুক্ত ছিল।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশে দলটি নানা ছলচাতুরির মাধ্যমে রাজনীতিতে ফিরে আসে, অথচ তাদের আদর্শিক অবস্থান কখনোই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সঙ্গে মেলে না।
জামায়াত ইসলাম ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার বানিয়ে বারবার ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে।
তাদের ভাষা সবসময় ধর্মীয় মোড়কে মোড়ানো হলেও উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতা দখল ও গোপন রাজনৈতিক শত্রুতা চরিতার্থ করা।
২০০১-২০০৬ মেয়াদে সরকারে থাকার সময় দলটি প্রশাসনে নিজেদের লোক বসিয়ে রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে ধর্মীয় উগ্রতা ছড়িয়ে দেয়।
জামায়াতপন্থী শিক্ষক, বিচারক, কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যদের ছড়িয়ে দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে একরকম ‘ইসলামীকরণ’ করার চেষ্টা চলে।
ব্লগার হত্যা, যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবিতে সহিংস আন্দোলন, বিচারালয়ের ওপর হামলা—এসবের নেতৃত্বে ছিল জামায়াতের কর্মী-সমর্থকরা।
দলটি কখনোই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনি। তাদের শীর্ষ নেতারা ‘শরিয়াহ ভিত্তিক রাষ্ট্র’ চায় বলে জানালেও বাস্তবিক অর্থে তা দেশের সংবিধানের পরিপন্থী।
জামায়াতের ছাত্রসংগঠন শিবির দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসগুলোতে সন্ত্রাসের রাজত্ব চালিয়েছে—বিরোধী মত দমন, অস্ত্রের মহড়া, শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা ছিল তাদের নিয়মিত কৌশল।
আদালত জামায়াতের রাজনৈতিক স্বীকৃতি বাতিল করলেও তারা ভিন্ন নামে, ছদ্মবেশে রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে।
আজও জামায়াত তাদের অতীতের ভুল স্বীকার করেনি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে ‘প্রহসন’ বলেই মনে করে।
এমন একটি দল গণতন্ত্রের জন্য নয়, বরং সমাজকে বিভক্ত করতে এবং তরুণ প্রজন্মকে বিপথে নিতে কাজ করে যাচ্ছে।
এদের বিরুদ্ধে সজাগ না থাকলে দেশ আবার উগ্রতার দিকে ধাবিত হবে—যার মাশুল দিতে হবে পুরো জাতিকে।