চাঁদাবাজদের খপ্পরে বাংলাদেশ

কাজী তৌফিক এলাহী তারেক: স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে এসে আজ বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগোলেও একটি ভয়াবহ সমস্যার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে চাঁদাবাজি। ব্যবসা, নির্মাণ, পরিবহন এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান— কোথায় নেই এই ভয়ঙ্কর সন্ত্রাস! চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অর্থনীতি, ভেঙে পড়ছে আইনশৃঙ্খলা, এবং সর্বোপরি, আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ।

বিভিন্ন মার্কেট, দোকান, গার্মেন্টস ও নির্মাণ প্রকল্পে নিয়মিত চাঁদা আদায় করা হয়। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে স্থানীয় বিএনপির সন্ত্রাসী ও তাদের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা গ্রুপগুলো। অনেকেই নিরুপায় হয়ে এই টাকা দিতে বাধ্য হন, ফলে বিনিয়োগে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন উদ্যোক্তারা।

বাস, ট্রাক, পিকআপ এমনকি রিকশাও চাঁদাবাজদের হাত থেকে রেহাই পায় না। প্রতিদিন রুটের ভিত্তিতে নির্ধারিত টাকা তুলে নেয় একটি শক্তিশালী চক্র। এর ফলে যাতায়াত খরচ বাড়ে, ভোগান্তি বাড়ে সাধারণ মানুষের।

দুঃখজনক হলেও সত্য বিএনপি যে পরিমান চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়ে গত কয়েক মাসে তা অকল্পনীয়। স্থানীয় কিছু নেতা বা নেতার আশীর্বাদপুষ্ট দালালরা নেতার পরিচয়ে চাঁদাবাজিকে ‘স্বাভাবিক নিয়ম’ বানিয়ে ফেলেছে। পুলিশ, প্রশাসনের অনেকেই এই চক্রের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত।
যখন অপরাধীরা আইনের আওতায় আসে না, তখন সাধারণ মানুষ বিচার চাওয়ার সাহসও হারিয়ে ফেলে। অনেক সময় ভুক্তভোগীরা মামলা করতে গিয়ে উল্টো হয়রানির শিকার হন। ফলে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য দিনের পর দিন বেড়েই চলছে।

  • বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে
  • ছোট ব্যবসায়ীরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে
  • সাধারণ মানুষের ব্যয় বাড়ছে
  • আইনশৃঙ্খলার প্রতি মানুষের আস্থা কমছে
  • সমাজে ন্যায়বিচারের বোধ হারিয়ে যাচ্ছে

চাঁদাবাজি একটি জাতীয় ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এই ব্যাধি থেকে মুক্তির জন্য প্রয়োজন দ্রুত, কঠোর ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত পদক্ষেপ। সরকার, প্রশাসন, মিডিয়া এবং সাধারণ মানুষ— সবাইকে সম্মিলিতভাবে এই সামাজিক ক্যান্সারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
নইলে উন্নয়নের মুখোশের আড়ালে ধীরে ধীরে গিলে ফেলবে এক ভয়ঙ্কর অন্ধকার।