রাজনীতির আসল চালক: নেতা নাকি দলের ‘কাগজে আদর্শ’?

ক্রাইম; দর্পন; ক্রাইম দর্পন; crime; crimedorpon; crimedarpan; dorpon; darpan; The Weekly Crime Dorpon; the weekly crime darpan; crimedorpon.com;

অহি আহমেদ: মিটফোর্ডের ঘটনার পর যেসব মানুষ বিএনপির দিকে আঙুল তুলে বলছেন, “চাঁদাবাজি বন্ধ করো”, “কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করো”—তাদের দেখে সত্যিই হাসি পায়।

আপনারা কী সত্যিই বিশ্বাস করেন, বিএনপির এখনো সেই সক্ষমতা আছে তাদের কর্মীদের লাগাম টেনে ধরার?

তারেক রহমান তো দূরের কথা**, তার বাবা জিয়াউর রহমান বেঁচেও থাকলে আজকের বিএনপির চাঁদাবাজি-মাফিয়া সংস্কৃতি বন্ধ করতে পারতেন না। কারণ, বিএনপির রাজনীতির ভিতেই এই সংস্কৃতি ঢুকে গেছে।

বিএনপির মূল অর্থনৈতিক মডেল:

১. বড়লোক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা*

এটা রাজনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পন্থা। কারণ চাঁদা নেওয়ার ঘটনা ফাঁস হলে ব্যাপকভাবে স্ক্যান্ডাল হয়।
আর যারা টাকা দেয়, তারা চায় “কন্ট্রাক্টের বিনিময়ে প্রভাব”—যার ফলে বিএনপির স্বাধীনতা কমে যায়।

২. কর্মীদের অপরাধ করতে দেওয়া এবং তাদের রক্ষা করা**
এই পথেই এখন চলছে বিএনপি।
নেতাকর্মীরা করে—
চাঁদাবাজি
মাদক ব্যবসা
ভূমি ও ব্যবসা দখল
বালু-পাথর চুরি
পতিতাবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ
ক্যাবল/ডিশ ব্যবসা
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং, ঝুট ব্যবসা ইত্যাদি

দলের প্রভাব দিয়ে এসব চলতে দিয়ে আবার তাদের **আইনি নিরাপত্তা দেওয়া হয় দলীয় ছায়ায়।

এই সিস্টেম বিএনপিকে কী দেয়?

  1. কর্মীরা দলের সঙ্গে নির্ভরশীল থাকে
    তাদের উপার্জনের মূল উৎসই দলের ছায়া। দল ছেড়ে গেলে আয় বন্ধ হয়ে যাবে—এই ভয়েই তারা থেকে যায়।

২. কর্মীরা নিজেরাই প্রতিযোগিতা করে দলের জন্য টাকা জোগাতে
কে কত টাকা দেয়, সেই হিসেবে পদ-পদবী হয়।
পদ পেলে আয় বাড়ে। এই “চক্র” টিকিয়ে রাখতে বিএনপি চায় না এটি ভাঙুক।

এটাই “ক্লায়েন্ট-প্যাট্রন” রাজনীতির ক্লাসিক উদাহরণ**, যা আওয়ামী লীগও করেছিল, কিন্তু বিএনপি এতে আরও “ট্রাইবাল”।

দলে গণতন্ত্রের অভাব মানে “ভাই-গ্রুপ বনাম ভাই-গ্রুপ” রাজনীতি

বিএনপির রাজনৈতিক ভেতরকাঠামো হচ্ছে ভাইপন্থী গোষ্ঠী রাজনীতি
নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসবে,
ছোট ছোট ওয়ার্ড দখলের মারামারি
পুরো আসন দখলের জন্য শোডাউন
দলের ভেতর কোন্দল—এইসবই বাড়বে।

বহিষ্কার নাটক ও “দলের স্মৃতি হারানো রোগ”

দল লোক দেখানো বহিষ্কার করবে। মিডিয়ায় আসবে “শাস্তি দেওয়া হলো” নাটক।
কয়েক মাস পর দেখবেন,
তারা আবার দলে
আবার পদবী পাচ্ছে
আবার দলের কাজ করছে।

এটাই বিএনপির রাজনৈতিক ঐতিহ্য।

বিএনপির ঐতিহ্য = জিয়াউর রহমানের গোয়েন্দানির্ভর চাঁদাবাজি

অনেকে বলেন, জিয়াউর রহমান ব্যক্তিগতভাবে সৎ ছিলেন। হতে পারে।
কিন্তু তাঁর আমলেই শুরু হয়েছিল—
মন্ত্রীদের দিয়ে চাঁদা তুলিয়ে পার্টি ফান্ড ভরানো
গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়
রাজনীতিকে পেশার মতো ব্যবহার

এখন বিএনপি সেটা “পলিসি” হিসেবে চালাচ্ছে।

কেন বিএনপি সংস্কার চায় না?

কারণ, চাঁদাবাজ-মাফিয়া কর্মীদের বাদ দিলে
✅ দলের ফান্ড শুকাবে
✅ লোকবল কমবে
✅ মাঠে প্রভাব থাকবে না

তাই যারা আশায় বসে আছেন, বিএনপি চাঁদাবাজি বা সহিংসতা বন্ধ করবে—
তারা হয় খুব ভুল বুঝছেন,
অথবা **অভিনয় করছেন।

মিটফোর্ড একটা ট্রেলার মাত্র

ক্ষমতায় আসলে পুরো ফিল্মটা দেখবেন।
এটাই বিএনপির স্বভাব।
তাদের রাজনীতি *গণতন্ত্র নয়, বরং *সংগঠিত সন্ত্রাস, ক্ষমতার লোভ ও অপরাধের উপর দাঁড়ানো এক ত্রাস-ব্যবস্থা।

Leave a Reply