ইয়াহিয়া আহমেদ তানহার: পুলিশি নির্যাতন আজ আর কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি সমাজের একটি গভীর সমস্যায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই পুলিশি নির্যাতনের নতুন নতুন ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পুলিশের ভূমিকা নাগরিকের নিরাপত্তা প্রদান করা হলেও বাস্তবে তা অনেক ক্ষেত্রেই বিপরীত চিত্র দেখা যায়। পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সময় এসেছে।
পুলিশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কোনো অপরাধের অভিযোগ ছাড়াই মানুষকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে। হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরা মৃত্যুবরণ করছেন। এসব ঘটনার পরও পুলিশের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হচ্ছে না। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগছে, পুলিশ কি আইনের ঊর্ধ্বে?
পুলিশি নির্যাতনের পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। পুলিশের মধ্যে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা এবং জবাবদিহিতার অভাব অন্যতম। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সমর্থনে নিম্নপদস্থ কর্মীরা নির্যাতন চালাচ্ছে। এছাড়াও, পুলিশের প্রশিক্ষণ ও মানবাধিকার সচেতনতার অভাবও নির্যাতনের ঘটনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। পুলিশের উচিত জনগণের সেবা করা, কিন্তু বাস্তবে তারা অনেক ক্ষেত্রেই জনগণের শত্রুতে পরিণত হয়েছে।
পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি। প্রথমত, পুলিশের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। দ্বিতীয়ত, পুলিশের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। মানবাধিকার ও আইনের শাসন সম্পর্কে পুলিশকে সচেতন করতে হবে। তৃতীয়ত, সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে এবং আইনি সহায়তা নিতে হবে।
সরকার ও প্রশাসনের উচিত পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। পুলিশের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোরও এ বিষয়ে সোচ্চার হতে হবে। পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো শুধু নির্যাতিত ব্যক্তির দায়িত্ব নয়, এটি সমগ্র সমাজের দায়িত্ব। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে পুলিশি নির্যাতনের অবসান ঘটাতে হবে।