আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের: আজকের বিশ্বে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও মৌলবাদ একটি বড় হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এটি শুধু শান্তি ও সম্প্রীতিকে নষ্ট করছে না, বরং মানবতার মৌলিক মূল্যবোধকেও ধ্বংস করছে। ধর্মের নামে হিংসা, বিদ্বেষ ও বিভেদের এই বিষবৃক্ষ সমাজের শিকড়ে বিষ ঢেলে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সকলেরই দায়িত্ব ধর্মীয় উগ্রবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং মানবতা, সহিষ্ণুতা ও শান্তির পথে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
ধর্মীয় উগ্রবাদ ও মৌলবাদের মূল লক্ষ্য হলো মানুষের মনে ভয় ও বিভেদ সৃষ্টি করা। তারা ধর্মের নামে অপব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে এবং হিংসার পথে পরিচালিত করে। কিন্তু প্রকৃত ধর্ম কখনও হিংসা বা বিদ্বেষের শিক্ষা দেয় না। প্রতিটি ধর্মই শান্তি, প্রেম ও মানবতার বার্তা বহন করে। তাই আমাদের উচিত ধর্মের প্রকৃত শিক্ষাকে ধারণ করা এবং উগ্রবাদের অপব্যাখ্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।
ধর্মীয় উগ্রবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন সচেতনতা। আমাদের সমাজের প্রতিটি স্তরে এই সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনগুলোর মাধ্যমে মানুষকে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও সম্প্রীতির শিক্ষা দিতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে এই বিষয়ে সচেতন করতে হবে, যাতে তারা উগ্রবাদের ফাঁদে পা না দেয়।
এছাড়াও, রাষ্ট্র ও সরকারেরও এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। ধর্মীয় উগ্রবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। যারা ধর্মের নামে হিংসা ও বিদ্বেষ ছড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একই সাথে, সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমে উগ্রবাদী প্রচারণা রোধ করতে হবে।
ধর্মীয় উগ্রবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুধু রাষ্ট্র বা সরকারের দায়িত্ব নয়, এটি আমাদের সকলের দায়িত্ব। আমাদের প্রত্যেককে এই লড়াইয়ে সামনে আসতে হবে। আমাদের মানবতা, সহিষ্ণুতা ও শান্তির পথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ধর্মের নামে হিংসা ও বিদ্বেষের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। কারণ, শান্তি ও সম্প্রীতিই হলো আমাদের একমাত্র পথ। আসুন, আমরা সবাই মিলে একটি উগ্রবাদমুক্ত, শান্তিপূর্ণ ও মানবিক সমাজ গড়ে তুলি।