পুলিশের দুর্নীতি: আইনের শাসন নাকি শাসকের আইন?

ক্রাইম; দর্পন; ক্রাইম দর্পন; crime; crimedorpon; crimedarpan; dorpon; darpan; The Weekly Crime Dorpon; the weekly crime darpan; crimedorpon.com;

ইয়াহইয়া আহমদ তানহার: পুলিশের দুর্নীতি আজ সমাজের একটি গভীর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কথা বললেও বাস্তবে পুলিশের দুর্নীতি সেই আইনের শাসনকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগছে, পুলিশ কি আইনের রক্ষক নাকি শাসকের হাতিয়ার? পুলিশের দুর্নীতি শুধু আইনের শাসনকেই ক্ষুণ্ন করছে না, বরং জনগণের আস্থাকেও নষ্ট করছে।

পুলিশের দুর্নীতির নানা রূপ দেখা যায়। চাঁদাবাজি, ঘুষ গ্রহণ, মামলা পরিচালনায় পক্ষপাতিত্ব, এবং অপরাধীদের সহায়তা করা পুলিশি দুর্নীতির সাধারণ উদাহরণ। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের সাথে আঁতাত করে। এর ফলে অপরাধীরা আরও সাহস পায় এবং আইনের শাসন দুর্বল হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ আইনের আশ্রয় নিতে গিয়ে পুলিশের দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন।

পুলিশের দুর্নীতির পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। পুলিশের অভ্যন্তরীণ জবাবদিহিতার অভাব, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সমর্থন, এবং রাজনৈতিক প্রভাব অন্যতম। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নিম্নপদস্থ কর্মীদের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার সুযোগ দেন। এছাড়াও, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করে। এর ফলে পুলিশের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা প্রশ্নের মুখে পড়ে।

পুলিশের দুর্নীতি রোধ করতে হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। প্রথমত, পুলিশের অভ্যন্তরীণ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি দুর্নীতির ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। দ্বিতীয়ত, পুলিশের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। নৈতিকতা ও আইনের শাসন সম্পর্কে পুলিশকে সচেতন করতে হবে। তৃতীয়ত, রাজনৈতিক প্রভাব থেকে পুলিশকে মুক্ত করতে হবে। পুলিশের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।

সরকার ও প্রশাসনের উচিত পুলিশের দুর্নীতি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোরও এ বিষয়ে সোচ্চার হতে হবে। পুলিশের দুর্নীতি রোধ করা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, এটি সমগ্র সমাজের দায়িত্ব। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে পুলিশের দুর্নীতির অবসান ঘটাতে হবে।