আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের: সিলেটে চুরি ও ডাকাতির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক মাস ধরে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় চুরি ও ডাকাতির ঘটনা বেড়ে গেছে, এবং এসব ঘটনার পেছনে ছাত্রদলের কিছু সদস্য সক্রিয়ভাবে জড়িত বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন, এই অপরাধীদের পক্ষে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হওয়ায় তারা আইনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে।
গতকাল রাতে সিলেটের জিন্দাবাজার এলাকায় একটি বাসায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা বাসিন্দাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, গয়না ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী লুট করে নেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, এই ডাকাতদের মধ্যে ছাত্রদলের কিছু সদস্য রয়েছে। এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা চিনি তাদের মধ্যে কয়েকজনকে। তারা ছাত্রদলের সদস্য এবং রাজনৈতিক আশ্রয়ের কারণে তারা নির্ভয়ে এসব কাজ করছে।”
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) ওসি আবুল বাশার চৌধুরী জানান, তারা এই বিষয়ে সতর্ক রয়েছেন এবং অভিযোগের সত্যতা যাচাই করছেন। তিনি বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক সংগঠন বা ব্যক্তিকে অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।”
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে, এই অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা প্রচারণা। ছাত্রদলের সিলেট জেলা শাখার সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন বলেন, “আমাদের সংগঠনের কোনো সদস্য এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত নয়। আমরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বদা সচেষ্ট।”
তবে স্থানীয় বাসিন্দারা ছাত্রদলের এই বক্তব্য মানতে নারাজ। তারা বলছেন, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার কারণে এই অপরাধীরা ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। সমাজকর্মী আরিফুল ইসলাম বলেন, “আমরা চাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।”
এই ঘটনায় সিলেটের সাধারণ মানুষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা চান, যারা এই ধরনের অপরাধে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বলেছেন, রাজনৈতিক সংগঠনের নাম ব্যবহার করে অপরাধ করা যেন বন্ধ হয়, সেজন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
এদিকে, এই অভিযোগের প্রেক্ষাপটে সিলেটে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই বলছেন, রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্যরা যদি অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে তা সমাজের জন্য একটি বড় হুমকি। এই ঘটনার তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।