মোঃ হায়দার হোসেন: বাংলাদেশ একটি বহুসংস্কৃতির দেশ, যেখানে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবাই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বসবাস করে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক ও ধর্মীয় গোষ্ঠী তাদের স্বার্থে ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো বারবার ধর্মীয় উসকানি ও ঘৃণা ছড়ানোর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ানোর অভিযোগে সমালোচিত হয়েছে।
জামায়াতের নেতারা বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা গুজব, ভুল ব্যাখ্যা ও প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও তারা ধর্মের নামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনে অংশ নিয়েছিল। স্বাধীনতার পরও তারা তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।
গত কয়েক বছরে জামায়াত ও তার ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্যদের বিরুদ্ধে হিন্দু, বৌদ্ধ ও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের উপর হামলা, মন্দির ভাঙচুর ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়ার মতো ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা মিথ্যা খবর ছড়িয়ে ধর্মীয় অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করে, যা কখনো কখনো সহিংসতায় রূপ নেয়।
বাংলাদেশের ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিপূর্ণ সমাজব্যবস্থাকে নষ্ট করার জন্য জামায়াতের এমন কর্মকাণ্ড একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাদের কার্যক্রম শুধু আইন-শৃঙ্খলার জন্যই ঝুঁকি নয়, এটি জাতীয় ঐক্য ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার মূল্যবোধকেও ক্ষুণ্ণ করছে। সরকার ও সুশীল সমাজের উচিত এ ধরনের গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া এবং সাধারণ মানুষকে সচেতন করা।
ধর্মীয় সম্প্রীতি বাংলাদেশের শক্তির মূলভিত্তি। জামায়াতের মতো গোষ্ঠীগুলোর বিভেদমূলক রাজনীতি ও ধর্মীয় উসকানি রোধ করতে আইনের সঠিক প্রয়োজন। পাশাপাশি, সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে একটি সহনশীল সমাজ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে।