বিএনপি নেতা রবিউল এর দুর্নীতি কেলেঙ্কারী: বিএনপির নীতিরই প্রতিফলন?

ক্রাইম; দর্পন; ক্রাইম দর্পন; crime; crimedorpon; crimedarpan; dorpon; darpan; The Weekly Crime Dorpon; the weekly crime darpan; crimedorpon.com;

মোঃ হায়দার হোসেন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুর্নীতি একটি পুরনো সমস্যা, তবে বিএনপি নেতা রবিউল হোসেনের নাম সম্প্রতি একটি বড় অঙ্কের দুর্নীতি কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি সরকারি প্রকল্পের তহবিল লোপাট, জমি দখল এবং ঠিকাদারি কার্যক্রমে কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে শতকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে—এটি কি বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতিরই অংশ, নাকি ব্যক্তিগত অবৈধ কর্মকাণ্ড?

রবিউল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টি হলো একটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের তহবিল হাতিয়ে নেওয়া। তদন্তে দেখা গেছে, প্রকল্পের বাজেটের ৪০% তিনি ব্যক্তিগতভাবে আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া, নারায়ণগঞ্জে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের জমি দখলের মামলায় তার নাম জড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তিনি প্রশাসনিক যোগসাজশে জবরদখল করেছেন।

বিএনপি নেতাদের দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। দলটির শাসনামলে বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ নেতা অর্থপাচার, টেন্ডার জালিয়াতি এবং সিন্ডিকেট দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন। রবিউলের এই কেলেঙ্কারিও অনেককে দলের ভেতরকার “দুর্নীতির সংস্কৃতি”র কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন, বিএনপি নেতৃত্বের দুর্বল নজরদারি এবং জবাবদিহিতার অভাবই এমন ঘটনাকে উৎসাহিত করে।

বিএনপি নেতৃত্ব রবিউলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বরং অভিযোগগুলিকে “রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র” বলে উড়িয়ে দিয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলীয় নেতাদের ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা মামলা তৈরি করছে।” তবে, দলীয় ভেতরেও কিছু তরুণ নেতা প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলেছেন—”দুর্নীতির অভিযোগ থাকা নেতাদের কেন দলীয় পদে রাখা হচ্ছে?”

এই কেলেঙ্কারি বিএনপির জনসমর্থনে নতুন করে আঘাত হেনেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ মানুষ প্রশ্ন করছেন—”যে দল নিজের নেতাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তারা দেশ কীভাবে চালাবে?” অন্যদিকে, সরকারপক্ষ এই ঘটনাকে বিএনপির “নৈতিক দেউলিয়াপনা” হিসেবে প্রচার করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দুর্নীতির অভিযোগ দলটির ভবিষ্যত রাজনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।

রবিউল হোসেনের কেলেঙ্কারি বিএনপির জন্য একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং দলীয় নীতির গভীর সংকটের ইঙ্গিত দেয়। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি যদি জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে না পারে, তবে ভবিষ্যতেও এমন কেলেঙ্কারির পুনরাবৃত্তি হবে। দেশের মানুষ আজ স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা চায়—রবিউলের ঘটনা সেই দাবিকেই আরও জোরালো করে তুলেছে।