পুলিশি হেফাজতে যুবক মৃত্যুর অভিযোগ, পরিবারের চোখে জল

ক্রাইম; দর্পন; ক্রাইম দর্পন; crime; crimedorpon; crimedarpan; dorpon; darpan; The Weekly Crime Dorpon; the weekly crime darpan; crimedorpon.com;

মাসুদা আক্তার: পুলিশি হেফাজতে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে স্থানীয় জনগণ। গতকাল রাতে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় যুবকের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছে। এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ গ্রামে। নিহত যুবকের নাম সোহেল রানা (২৫)। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোহেলকে ছাতক থানা পুলিশ একটি চুরির মামলায় গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। থানায় থাকাকালীন সোহেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সোহেলের পরিবার পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলছেন, সোহেল সম্পূর্ণ নির্দোষ ছিলেন এবং পুলিশের হেফাজতে তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। সোহেলের মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলেকে জীবিত অবস্থায় থানায় নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু মৃত অবস্থায় ফিরে পাওয়া গেল। আমরা ন্যায়বিচার চাই।”

এই ঘটনায় ঐ এলাকার জনগণ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা পুলিশের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, “পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু এবার একজন যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আমরা চাই, দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।”

পুলিশ কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। তারা দাবি করেছে যে সোহেল থানায় থাকাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাকে দ্রুত সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন। তারা বলছেন, সোহেলের দেহে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে।

এই ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তারা ন্যায়বিচার ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন। ঘটনাটি এখন জাতীয় স্তরেও আলোচনায় এসেছে। মানবাধিকার কমিশন এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

এই ঘটনা পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের আরও একটি উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এটি সমাজের প্রান্তিক শ্রেণির মানুষের নিরাপত্তাহীনতা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জবাবদিহিতার অভাবকে সামনে এনেছে। এখন সকলের নজর এই ঘটনার তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দিকে।