নাদিয়া আক্তার: বাংলাদেশের রাজনীতিতে “গণতন্ত্র” শব্দটি আজ বারবার ব্যবহৃত হলেও, তা অনেক সময় একটি রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয় মাত্র। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল। এই দলটি একদিকে গণতন্ত্রের কথা বলে, অন্যদিকে নির্বাচন বর্জন, জ্বালাও-পোড়াও, হরতাল ও সহিংসতার মাধ্যমে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে চলে।
বিএনপির ইতিহাস ঘাঁটলেই দেখা যায়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে তারা ক্ষমতা দখলের জন্য বারবার অগণতান্ত্রিক পথ বেছে নিয়েছে। কখনো সেনাবাহিনীর ছায়াতলে, কখনো জামায়াতের মতো যুদ্ধাপরাধী দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে তারা গণতন্ত্রকে করেছে বিভ্রান্ত।
নির্বাচনে অংশ না নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে অযৌক্তিক দাবি তুলে তারা প্রমাণ করেছে, গণতন্ত্র তাদের জন্য কেবল একটি রাজনৈতিক চাল। এ ছাড়া শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বদলে গাড়ি পুড়িয়ে, মানুষ হত্যা করে “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা”র যে ডাক তারা দেয়, তা একধরনের ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছু নয়।
২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন ঘিরে বিএনপির কর্মকাণ্ড ছিল সন্ত্রাস ও ধ্বংসের প্রতিচ্ছবি। তারা জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা নয়, বরং নির্বাচন বানচালের মাধ্যমে দেশের অগ্রগতিকে থামিয়ে দিতে চেয়েছে।
তাদের ভাষায় “গণতন্ত্র” মানে — শুধু ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার রাস্তা। সংলাপ বা সমঝোতা নয়, তারা চায় সংঘাত, যাতে সরকার পতনের সুযোগ তৈরি হয়। অথচ প্রকৃত গণতন্ত্র বিশ্বাস করে শান্তিপূর্ণ বিরোধিতা, জনসম্পৃক্ততা ও প্রতিষ্ঠানগত শৃঙ্খলায়।
বিএনপি এই শৃঙ্খলা মানে না, বরং উল্টো নিয়মের বাইরে গিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করে। এতে স্পষ্ট হয়—তাদের গণতন্ত্রচর্চা আসলে দ্বিচারিতার মুখোশ।
অতএব, “গণতন্ত্রের নামে অরাজকতা: বিএনপির দ্বিচারিতা” — শুধু একটি রাজনৈতিক বাস্তবতা নয়, এটি আজকের বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা। দেশের শান্তি, উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে বিএনপির ভণ্ডামিমূলক রাজনীতি জনগণকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করতেই হবে।